স্টেট লেভেল রেস্লার থেকে জনপ্রিয় গায়ক। জেনে নিন মান্না  দে কে নিয়ে কিছু অজানা তথ্য।

 

মান্নাদের গান শুনে বেড়ে উঠা হয়নি এমন বাংগালির সংখ্যা নেহাতই কম । উপমহাদেশের এই বরেন্দ্র শিল্পীর কিছু চমকপ্রদ তথ্য নিয়ে আজকের আয়জন। মা বাবা নাম দিয়েছিলেন প্রবোধ চন্দ্র দে। গানের জগতের এই কিংবদন্তী জন্মগ্রহন করেন ১মে,১৯১৯ সালে। বাবার নাম ছিল পুর্ন চন্দ্র আর মা মহামায়া দেবী।

গান দিয়েই কিন্তু তার কির্তি শুরু নয়। প্রথম জিবনে তিনি ছিলেন স্টেট লেভেলের একজন রেস্লার যার গুরু ছিলেন উপমহাদেশের কিংবদন্তী যতীন্দ্রচরণ গুহ ওরফে গবর গুহ যিনি কিনা ১৯২১ সালের প্রথম এশিয়ান হিসেবে ওয়ার্ল্ড হেভি ওয়িঘত চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।

তবে গানের প্রতিভা ছিল তার সেসময় থেকেই। কলেজে থাকা কালিন আন্তঃকলেজ গানের প্রতিযোগিতায় তিনটি আলাদা আলাদা শ্রেনিবিভাগে পুরস্কার লাভ করেন। সংগীতের জগতে প্রবেশ করেন কাকা কৃষ্ণ চন্দ্র দে ওরফে কেসি দের হাত ধরে। এরপর দীক্ষা নেন কিংবদন্তি গায়ক সচিন দেব বর্মনের কাছে।

ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রিতে গায়ক হিসেবে অভিষেক ঘটে ১৯৪২ সালে “তামান্না” ছবিতে “জাগো জাগো আয়ে ঊষা” গানের মাধ্যমে। গানটি পরবর্তিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেসময়ের নামকরা সংগীত শিল্পী মোহাম্মদ রফি,কিশোর কুমার এবং মুকেশদের মতো তিনিও ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ এর দশক পর্যন্ত ভারতীয় চলচিত্র জগতে সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।

তার জিবনে সর্বমোট রেকর্ডিং এর সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি। বাংলা হিন্দি ছাড়াও গান করেছেন ১৩টি ভাষায়। ভোজপুরি, মাগাধি, পাঞ্জাবী, আসামীয, অধিয়া, কঙ্কানি, সিন্ধি, গুজরাটি, মারাঠি, কান্নাদা, মালায়াম এবং নেপালি ভাষাতে। রেকর্ড সংখ্যক ডুয়েট গানের অধিকারিও এই মান্না দে। আশা ভষলের সাথে ১৬০টি আর মোহাম্মদ রফির সাথে গেয়েছেন ১০১টি ডুয়েট গান।

তার জনপ্রিয় বাংলা গানের মধ্যে রয়েছে,

  • কফি হাউজের সেই আড্ডাটা;
  • আবার হবে তো দেখা;
  • এই কূলে আমি, আর ওই কূলে তুমি;
  • তীর ভাঙা ঢেউ আর নীড় ভাঙা ঝড়;
  • যদি কাগজে লেখো নাম;
  • সে আমার ছোট বোন;

আর হিন্দি গানের মধ্যে রয়েছে ,

  • “ শ্রী ফোরটুয়েন্টি” ছবিতে  “পেয়ার হুয়া ইকরার হুয়া”;
  • ”মেরা নাম জোকার” ছবিতে “ এ ভাই যারা দেখকে চলো”;
  • ‘দিল হি তো হ্যায়’ ছবিতে লাগা চুনারি মে দাগ ;
  • “উজালা” ছবিতে গাওয়া “আব কাহা জায়ে হাম”;
  • এবং “ শোলে” ছবিতে “ইয়ে দোস্তি”;

এই গানগুলো আজও হিন্দি গানের ইতিহাসে সবচেয়ে ক্লাসিক গান হিসেবে বিবেচিত হয়।

সংগীত জগতের এই কিংবদন্তী ৯৪ বছর বয়সে হৃদপিণ্ডের জটিলতায় ২৪শে অক্টোবর ২০১৩ সালে বেঙ্গালুরের এক হাসপাতালে চিরবিদায় নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

*